দুঃখজনক : ঈদের দিন বজ্রপাতে শিশুসহ ৯ জনের মৃত্যু!
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : ঈদের দিনে দেশে বজ্রপাতের ঘটনায় শিশুসহ ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইলে একই স্থানে ৩ কিশোর মারা গেছেন। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, হবিগঞ্জে একজন, বাগেরহাটে একজন, মেহেরপুরে একজন, কক্সবাজারে একজন ও নোয়াখালীতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর : টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় নদীতে গোসল করার সময় বজ্রপাতে ৩ কিশোর নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নদীর পাড়ে থাকা আরও দুইজন। মঙ্গলবার (৩ মে) সকালে উপজেলার দশকিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। যাঁরা মারা গেছেন, তাঁরা হলেন, উপজেলার হাতিয়া এলাকার রবিউলের ছেলে আরিফ (১৫), আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রফিক (১৪) এবং দশকিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের জুলহাসের ছেলে ফয়সাল (১৬)। উপজেলার দশকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মালেক ভূঁইয়া বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, ঈদের নামাজ পড়ার আগে সকালে তাঁরা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিলেন। এ সময় প্রবল বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। গোসল করার সময় হঠাৎ বজ্রপাতে এলাকার রবিউলের ছেলে আরিফ (১৫) ঘটনাস্থলেই মারা যান। ‘আহত অবস্থায় আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রফিক এবং জুলহাসের ছেলে ফয়সালকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদেরকেও মৃত ঘোষণা করেন। নোয়াখালী : নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বজ্রপাতে ৯ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুই শিশু। মঙ্গলবার (৩ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বয়ারচর ইউনিয়নের পূর্ব নবীপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বজ্রপাতে নিহত শিশুর নাম জিহাদ (৯)। তিনি ওই গ্রামের সাহেদ উদ্দিনের ছেলে। আহতরা হলেন, সাথি আক্তার (১২) ও নাদিয়া আক্তার (৫)। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, ঈদের দিন সকাল থেকে বাড়ির অন্য শিশুদের সঙ্গে আনন্দ উৎসবে মেতে ছিলো একই বাড়ির ৩ শিশু। সকাল থেকে আকাশ মেঘলা ছিলো। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় তিন শিশু ছাতা নিয়ে বাজারের দিকে গেলে হঠাৎ বজ্রপাতের শিকার হন। ‘পরে পরিবারের লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নেন। তখন চিকিৎসক জিহাদ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।’ ‘আহত সাথি ও নাদিয়াকে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ মেহেরপুর : মেহেরপুরে ঈদের নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর পথে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। মঙ্গলবার (৩ মে) জেলার মনোহরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কৃষকের নাম আব্দুর রাজ্জাক (৫৩)। অপর আহত ব্যক্তির নাম মন্টু (৪৮)। তাঁরা সম্পর্কে ভাই। রাজ্জাক পেশায় কৃষক ছিলেন। নিহতের পরিবার জানায়, সকালে ঈদের নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে বের হন রাজ্জাক ও মন্টু। পথে তাঁাঁ বজ্রপাতের কবলে পড়েন। পরে এলাকাবাসী তাঁদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাককে মৃত ঘোষণা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় বাবার কবর জিয়ারত করার সময় বজ্রপাতে রনি মিয়া (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলা সদরের দুর্গাপুরে এ ঘটনা ঘটে। রনি ওই এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে। আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শ্যামল রায় বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই রনি মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় গোসল করতে গিয়ে বজ্রপাতে শাহজাহান মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। সকালে এ ঘটনা ঘটে। বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোংলায় কাঠ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে মহির উদ্দিন শেখ (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। সকালে মোংলা উপজেলার আগা মাদুরপাল্টা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মহির উদ্দিন শেখ মোংলা উপজেলার মাদুরপাল্টা গ্রামের বাসিন্দা। মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বাঙলা ও ডনকে বলেন, বজ্রপাতে মহির নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আমরা তাঁর পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করবো। কক্সবাজার : কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডীতে বজ্রপাতে শামসুল আলম (৫০) নামে এক লবণচাষির মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন। বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মৃত লবণচাষি শামসুল আলম সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের নতুন মহাল মাঝের পাড়ার ইসমাইলের ছেলে। আহত দেলোয়ার একই এলালার মৃত আজম আলীর ছেলে। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুল গিয়াস বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, বিকেলে চৌফলদন্ডী নতুন মহাল মাঝেরপাড়ায় বৃষ্টি থেকে লবণ রক্ষা করতে গিয়ে হঠাৎ বজ্রপাতের কবলে পড়েন শামসুল আলম। ‘তখন তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।’ ‘সেখান থেকে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’